সিলেট ১৯শে মে, ২০২২ ইং | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২০
তাহিরপুর প্রতিনিধি:
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ঘরে ঘরে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা থাকলেও মহামারী করোনার কারণে এবার দুর্গাপূজার আনন্দ অনেকটা ম্লান। পূজার সেই পুরনো সংস্কৃতি থাকবে অনেকটা অগোচরে। বাইরে ঘুরতে যাওয়া, পূজাম-পগুলোতে আলোকসজ্জাসহ নানা ধরণের আয়োজনে শারদীয় উৎসবের সব ক্ষেত্রেই থাকছে স্বাস্থ্যবিধির কড়া নির্দেশ।
তাহিরপুর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানাতে শেষ মুহুর্তে মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।
জানা যায়,২২অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে হবে বোধন ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা থেকে ২৬অক্টোবর মহাদশমী বা বিজয়া দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
উপজেলার বিভিন্ন পূজাম-প ঘুরে দেখা যায়,হাওরাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যা,করোনা প্রাদুর্ভাব,জাদুকাটা ও ৩টি শুল্ক স্টেশন বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন হাওরাঞ্চলের শ্রমজীবী পরিবারে প্রভাব পড়েছে দুর্গাপূজার আয়োজনে। আর ম-পগুলোতে গান বাজনার জন্য জালিয়া ঢুলিদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও অন্যান্য বছরের মতো এবার তা আর হচ্ছে না। তবে ম-পে ম-পে দেবী দুর্গার বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে পাঁচদিনব্যাপী দুর্গোৎসব।
কাদা-মাটি,বাঁশ,খড়,সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা দেবী দুর্গার প্রতিমার শেষ মূহুর্তে ম-পে ম-পে দ্রুত চলছে রঙতুলির আঁচড়ে দুর্গাদেবীর প্রতিমা সাজানোর কাজ। প্রতিমার অবয়বকে আরও সুন্দর করে তুলতে দেবীর মূল অবয়ব গড়ে তোলা হয়েছে রঙতুলির আঁচড়ে। যার ফলে দম ফেলার ফুরসত নেই মৃৎশিল্পীদের। দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা।
টাংগুয়ার হাওর পাড়ের ইন্দ্রপুর গ্রামে ম-পে প্রতিমা নির্মাণে শিল্পী অখিল পাল বলেন,প্রতিটি প্রতিমায় বাঁশ-খড়খুটো দিয়ে তৈরি দেবীর অবয়বের ওপর মাটির প্রলেপ দেওয়ার কাজ শেষে এখন চলছে রঙ তুলির আঁচড়। প্রতিমার কাজ শেষ দিতে হবে,তাই সঙ্গীয়দের নিয়ে অর্ডারকৃত প্রতিটি ম-পেই কাজ চলছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাজ খুবই কম।
উপজেলা সদরের খলাহাটি দুর্গা মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কারিগর কৃষ্ণ দাস বলেন,করোনার কারণে এবার গত বছরের মত উৎসবমুখর পরিবেশ কাজ হচ্ছে না। এখন চলছে রঙ তুলির আঁচড় দেবীকে সাজানোর কাজ। করোনা আমাদের সকল আনন্দ,আয়োজন ও কাজে স্থবিরতা এনে দিয়েছে।
বাদাঘাট কালী বাড়ি পূজা কমিটির সভাপতি জগদীশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান,এবারের দুর্গাপূজা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে পালিত হবে। বাড়তি আলোকসজ্জা,আরতি,বাদ্য-বাজনা পরিহার করা হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ তাহিরপুর উপজেলার সভাপতি সুভাষ পুরকায়স্থ জানান,বন্যা ও বিশ্বব্যাপী করোনা প্রাদুর্ভাব এবারের দুর্গোৎসব অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তা সবাইকে বলাও হয়েছে। এবারের করোনা প্রাদুর্ভাব থেকে গোটা পৃথিবীর মানুষের যেন মুক্তি মেলে মা দুর্গার কাছেই এবারের বিশেষ প্রার্থনা থাকবে।
তাহিরপুর থানার অফিসার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন,পূজাম-পগুলোতে কঠোর নজরদারীতে নিরাপত্তায় থাকবে। কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটনা ঘটতে দেয়া হবে না।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন,উপজেলায় এ বছর ২৯টি মন্ডপে পালিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। করোনা পরিস্থিতি এ বারের দুর্গাপূজায় কুমারীপূজা না করা ও আলোকসজ্জা সীমিত এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব করার নির্দেশনা রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেরগুল আহমেদ
সম্পাদকীয় ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ দিশারি ২৯ আ/এ (২য় তলা) কালীবাড়ি রোড, সুনামগঞ্জ।
ফোনঃ ০৮৭১-৬২১২৩ মোবাইলঃ 01754887923
ইমেইলঃ sunamganjerdak@gmail.com
ওয়েবসাইটঃ www.sunamganjerdak.com