সিলেট ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ইং | ১৪ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২০
বৈশ্বক মহামারী করোনার প্রথম ওয়েব শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয়েছে সেকেন্ড ওয়েব ইতিমধ্যে আমারিকা ইপরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় সংক্রমণ বাড়ছে সাথে মৃত্যুহারও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ভ্যাকসিনের বিকল্প নেই। ইদানিং করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কয়েকটি দেশের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক কোম্পানী অনেক বড় সুখবর শুনাচ্ছে করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে । গত কয়েকদিন আগে মার্কিন ঔষধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজারের তথ্যসূত্রে জানা যায় , তাদের প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশের অধিক কার্যকর।বিশ্ববাসীর জন্য নিঃসন্দেহ এটা একটি দারুন সুখবর। তবে সুখবরটি সাথে অধিকাংশ দেশের অবকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফাইজারের ভ্যাকসিনটি বহুলাংশে কার্যকরী হলেও সংরক্ষণ করবার মতো অবকাঠামো নেই বিশ্বের অধিকাংশ দেশে। তবে কি সেই অবকাঠামো সে ব্যাপারে স্পষ্ট করেছে ফাইজার কর্তৃপক্ষ। এই টিকা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন শীতলতম স্থান। হিমাঙ্কের নিচে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এই টিকা সংরক্ষণ না করলে তা অকার্যকর হয়ে যাবে। মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এই টিকা ছয় মাস পর্যন্ত ভালো থাকবে। কিন্তু নিরাশার ব্যাপার হলো হাসপাতালে সাধারণভাবে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরে মাত্র পাঁচ দিন ভালো থাকবে। অথচ এই টিকা ২৮ দিনের ব্যবধানে দুইটি ডোজ দেওয়ার নিয়ম। সুতরাং এই টিকার জন্য বিশ্বের যে কোনো দেশের বিপুলসংখ্যক বিশেষ ধরনের কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিষয়টি কেবল ব্যয় সাপেক্ষই নয়, সময়সাপেক্ষও বটে।
ওয়ার্ল্ড স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে , ফাইজার সুটকেস আকারের একটি বিশেষ ট্রান্সপোর্ট বক্স তৈরি করছে । ড্রাই আইস তথা জমাটবাঁধা কার্বন ডাইঅক্সাইড ভর্তি এই বাক্সে জিপিএস ট্র্যাকারও ইনস্টল করা থাকবে, না খোলা অবধি ১০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে ৫ হাজার ডোজের ভ্যাকসিন। আরো অনেক কোম্পানি অনুরূপ কোল্ডবাক্সের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে । বিভিন্ন ধরণের রোগের জন্য বিশ্বে সবচাইতে বেশি ভ্যাকসিন উৎপাদনসক্ষমতা রয়েছে ভারতের। ভারতেও এই মুহূর্তে ফাইজার টিকা সংরক্ষণের জন্য মাইনাস ৭০ ডিগ্রির স্টোরেজ ব্যবস্থা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকার রিজিওনাল ডিরেক্টরও মনে করছেনÍফাইজার যে ধরনের টিকা তৈরি করেছে, তাঁর চাহিদামতো কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থা করাটাই আফ্রিকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একযোগে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের প্রত্যাশায় কোল্ডস্টোরেজ সুবিধার ম্যাপিংয়ের কাজ করেছে। ইউনিসেফেরও লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে স্বল্প আয়ের দেশে ৬৫ হাজার সোলার চালিত কোল্ডস্টোরেজ স্থাপন করা। তবে আরেকটি বিষয় হল, ফাইজার ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে ভাইরাসের জেনেটিক কোড ব্যবহার করে । এর গুণগতমান বজায় রাখবার জন্য বিপুল আয়োজনের দরকার বিধায় এর প্রতিটি ডোজের দামও পূর্বনির্ধারিত আনুমানিক ৩ হাজার টাকার চাইতে কম হবে না। গণহারে প্রয়োগের জন্য টিকাটি যথেষ্ট দামী। আমেরিকার ফাইজারের পাশাপাশি রাশিয়া দাবি করছে, তাদের স্পুটনিক টিকা ৯২ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। এফডিএ ইতিপূর্বে বলছে , করোনা টিকার কার্যক্ষমতা ৫০-৬০ শতাংশ হলেই ছাড়পত্র দেওয়া হবে। সেই নিরিখে দুটি টিকাই আশার সঞ্চার করেছে ।
এই মুহূর্তে করোনা মহামারি ঠেকাতে টিকার চেয়ে ভালো বিকল্প নেই । তবে টিকা নিয়েও বিশ্বব্যাপী রাজনীতি দেখা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হল, বিশ্বের কোথাও যদি একজনও কোভিড-বাহক থাকেন, তবে বিশ্ব কোভিডের ঝুঁকি হতে মুক্ত হবে না। সুতরাং বিশ্বের পরাশক্তিদের নিজেদের স্বার্থেই কোভিডের ভ্যাকসিন সহজলভ্য করা প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, বৈষম্য নয় সহজলভ্য করতে হবে ভ্যাকসিন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেরগুল আহমেদ
সম্পাদকীয় ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ দিশারি ২৯ আ/এ (২য় তলা) কালীবাড়ি রোড, সুনামগঞ্জ।
ফোনঃ ০৮৭১-৬২১২৩ মোবাইলঃ 01754887923
ইমেইলঃ sunamganjerdak@gmail.com
ওয়েবসাইটঃ www.sunamganjerdak.com