সিলেট ১৯শে মে, ২০২২ ইং | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৪৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১
মিজানুর রহমান মিজান:
অবশেষে সুনামগঞ্জ সহ সিলেট বিভাগের ৪ জেলাবাসী করোনা ভাইরাসের বহুল প্রতীক্ষিত টিকা পেয়েছেন। সিলেট বিভাগের চার জেলার জন্য ৩৭ কার্টন ভ্যাকসিন বরাদ্দ রয়েছে। প্রতি কার্টনে ১ হাজার ২০০ করে ভ্যাকসিন। এর মধ্যে মৌলভীবাজারে ৫ কার্টন, হবিগঞ্জে ৬ কার্টন ও সুনামগঞ্জের জন্য ৭কার্টন ভ্যাকসিন। অবশিষ্ট ১৯ কার্টন ভ্যাকসিন সিলেট জেলার জন্য। গত রবিবার ভোর ৬টায় কঠোর নিরাপত্তায় ফ্রিজারভ্যানে সাতটি কার্টুনে ১২ হাজার করে ৮৪ হাজার ভ্যাকসিন সুনামগঞ্জ পৌঁছায়। বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এই ভ্যাকসিন নিয়ে আসে। জেলা ইপিআই ভবনপ্রাঙ্গণে বেক্সিমকোর প্রতিনিধি আমিনুর রহমানের কাছ থেকে ভ্যাকসিন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন। এ সময় সুনামগঞ্জ সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জয়নাল আবেদীনসহ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভ্যাকসিন হস্তান্তর করার পর সেগুলো দ্রুত সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগরের জেলা ইপিআই ভবনের একটি বিশেষায়িত ফ্রিজার কক্ষে সংরক্ষণ করা হয়। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে নির্ধারিত কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। সে লক্ষ্যে জেলায় ভ্যাকসিন প্রদানকারীদের প্রশিক্ষণ চলছে। সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন জানান, ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম।আমরা ৮৪ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছি। এটা এ জেলার জন্য সুখবর। ভ্যাকসিনগুলো ইপিআই ভবনের সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিন ৪৪ হাজার মানুষকে দেওয়া যাবে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় জেলা ইপিআই ভবনে ভ্যাকসিন সংরক্ষিত থাকবে।
অপর দিকে, গত রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বেক্সিমকো’র ফ্রিজার গাড়ি করে করোনা ভাইরাসের টিকা সিলেট সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এরপর ভ্যাকসিনগুলো গাড়ি থেকে নামিয়ে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সম্প্রসারিত টিকাদান প্রোগ্রাম (ইপিআই) ভবনে নিয়ে রাখা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা.প্রেমানন্দ ম-ল। তিনি বলেন,সরকারের পক্ষ থেকে ১৯টি কার্টন করে সিলেটে ২ লাখ২৮ হাজার করোনার টিকা আমরা পেয়েছি। পর্যায়ক্রমে টিকা দেওয়া শুরু হবে।
সিলেটের বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপ পরিচালক ডা.আনিসুর রহমান বলেন, আমরা করোনার টিকা পেয়েছি। সেগুলো কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সংশ্লিষ্ট স্থানে যথাযথভাবে রাখা হয়েছে। ১৯টি কার্টন করে ২ লাখ ২৮ হাজার টিকা আমরা হাতে পেয়েছি। কবে থেকে শুরু হবে টিকাদান এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা টিকা দিবে তাদেরকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আশাকরা যাচ্ছে সবকিছু টিকটাক থাকলে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ২২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ফ্রিজে টিকা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। টিকা দানে প্রতিটি কেন্দ্রে দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী ও চারজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। টিকাদান পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে তার নেতৃত্বে চিকিৎসকের সাতজনের একটি টিম থাকবে। এছাড়াও ইতোমধ্যে আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
জানা যায়, টিকাদানে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ৪টি ও সদর হাসপাতালে ৮টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। টিকাদানে কেন্দ্র প্রতি থাকবেন ২ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক। টিকাদান পরবর্তী পর্যবেক্ষণের জন্য ৭ সদস্যের মেডিক্যাল টিম থাকবে। টিকাদান কার্যক্রমের সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে সিলেটে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নগর এলাকায় ১২টি কেন্দ্রে এবং উপজেলা পর্যায়ে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। এরইমধ্যে জেলা ও মহানগর এলাকার জন্যপৃথক দুটি কমিটিও করা হয়েছে। নগর এলাকায় ২২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক সিলেট করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সদস্য সচিব প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেটের উপ পরিচালক। জেলা পর্যায়ে করা ৮ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ ম-ল।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ শেরগুল আহমেদ
সম্পাদকীয় ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ দিশারি ২৯ আ/এ (২য় তলা) কালীবাড়ি রোড, সুনামগঞ্জ।
ফোনঃ ০৮৭১-৬২১২৩ মোবাইলঃ 01754887923
ইমেইলঃ sunamganjerdak@gmail.com
ওয়েবসাইটঃ www.sunamganjerdak.com